কে অযোগ্য
কে অযোগ্য? আর কেইবা যোগ্য? আজকের দিনে সেটা হয়ে দাঁড়িয়েছে লাখ টাকার প্রশ্ন। যখন স্কুল সার্ভিস কমিশন ছাব্বিশ হাজারের বেশি চাকুরি প্রার্থীদের নিয়োগপত্র দিয়েছে, তখন ধরে নিতে হবে সকলেই যোগ্য। লক্ষ লক্ষ চাকুরি প্রার্থীদের মধ্যে যারা নির্বাচিত হয়েছে বা নিয়োগপত্র পেয়েছে তারা কেন ভাবতে যাবে তারা অযোগ্য! আবার অনিলায়নের যুগে হাজার হাজার শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে, মহাবিদ্যালয়ে, উচ্চমাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চিরকুট দিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি পেয়েছিল। এরা সবাই অত্যন্ত যোগ্য কারণ বিরোধী দলে তখন কোনো বিকাশ ভট্টাচার্য ছিল না।
শিক্ষক নিয়োগে যোগ্য, অযোগ্য বিচারের প্রাথমিক দায়িত্বে আছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তারা যদি তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে না পারে, তার দায় নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ওপর বর্তায় কী করে? এখন জানা যাচ্ছে স্কুল সার্ভিস কমিশন, সিবিআই, হাইকোর্ট, এমনকি সুপ্রীম কোর্ট জানে না, কারা যোগ্য? শুধু জানে কারা অযোগ্য! তাই ছাব্বিশ হাজার শিক্ষকের চাকরি চলে গেছে। এর থেকে অযোগ্যতা আর কী হতে পারে?
সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়, স্কুল সার্ভিস কমিশন, সিবিআই, হাইকোর্ট, এমনকি সুপ্রীম কোর্ট আজও সঠিকভাবে জানতে পারল না, কারা যোগ্য আর কারা অযোগ্য! তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই ছাব্বিশ হাজারের মধ্যে কিছু অযোগ্য ছিল, ৮/৯ বছর চাকরি করার পর স্বাভাবিক নিয়মেই অভিজ্ঞতার নিরিখে তারা যোগ্য হয়ে যায়, এ কথা সর্বজনবিদিত। রাজনীতি করার অনেক বিষয় আছে, কিন্তু মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা মহাপাপ। এ কথা বুঝতে হবে রাজনৈতিক দল ছাড়াও কেন্দ্রিয় এজেন্সি, নির্বাচন কমিশন, রাজভবন, হাইকোর্ট, সুপ্রীম কোর্টকে। তারাও আজ রাজনীতির পাশা খেলায় মত্ত! নিরপেক্ষতা এখন দুরাশা।
ভুক্তভোগী দশ কোটি মানুষের পশ্চিমবঙ্গ অপেক্ষায় আছে। ২০২৬ সালের মে মাসে সেই বিক্ষুব্ধ জনতা হাতে কলমে প্রমান করে দেবে কে যোগ্য আর কে অযোগ্য?
১৫ এপ্রিল, ২০২৫