কবিতা

ঋণ



সঙ্ঘমিত্রা কুমার


ওদের চোখেও সন্ধ্যে নেমে আসে
ওদের চোখেও হিজল-বটের ঝুরি
ওরা যারা অচিনপুরে থাকে
পরমায়ু চুঁয়ে আবার ফোটায় কুঁড়ি।

ওদের বুকেতে শাপলা ফুলের বন
ওদের হাতেতে হাজার কাটার দাগ
ভালোবাসাকে আলাদা বোঝে কি ওরা?
ভাগ্য ওদের "লাগ্ ভেলকি লাগ্"।

ওদের জামাতে কালশিটে রঙ ছোপ
ওদের চুলেতে বাসতেল অপ্রতুল
বাঁচার জীবন হয়তো অপচয়!
রসায়ন ভেঙে চাওয়া-পাওয়াগুলো ভুল?

ওরা কি জানে উপত্যকার মানে?
ওরা কি বোঝে নিরক্ষরেখার চলন?
সেঁকে নিয়ে যত বেদনা-অনুযোগ
দিন শেষে হয় অভ্যেসেরই গলন;

কবিতা, কবি ওদের জন্য নয়,
রাংতা মোড়ানো লাল-হলুদের বোকে
অ-স্বাভাবিক কুয়াশা কাটতো যদি
চিকচিকে হাসি জাগতে পারতো চোখে।

পক্ষকালের হিসেব রাখে না ওরা
প্রত্যয়ী কিছু স্বপ্ন আনাচে ঘোরে
নিভন্ত আলো কিসের বীজ যে বোনে?
গোপন ইচ্ছা দূরে দূরে যায় সরে।

ওদের নাভিতে শ্বাস নেয় যে ধ্বনি
রেওয়াজ করে না তাদের সেই সুর
উদাসীন হাসি কল্পনাদের মারে
ওরা শোনে তাই মেলানো শব্দ-খুর।

ভরন্ত ঋণ এক পৃথিবীর কাছে
ফুলেতে-ফলেতে অনন্ত মেশামিশি
সংখ্যা মাপছে ওরা নীরব শ্রমে
ঋণে ডুব দেয় আঁধার ভারে নিশি।

চিত্রঋণঃ অন্তর্জাল থেকে প্রাপ্ত।