গল্প ও অণুগল্প

নাত-বউ



অনিন্দিতা মুখার্জী সাহা


"কি করে পারলি বলতো এমন একটা কাজ করতে! কি করে ভুলে গেলি যে কত বড় বংশের ছেলে তুই! ঠাকুমার কত স্বপ্ন যে বড়ো নাতির বিয়ে ধুমধাম করে দেবে! কত সুন্দরী সুন্দরী মেয়েদের বাতিল করে দিচ্ছে তোর ঠাকুমা! কি না লক্ষ্মী প্রতিমার মত নাত-বউ চাই ওঁনার! চাকরি করা বউ চলবে না! নম্র ভদ্র মিষ্টি হতে হবে! আরও কি সব! - মুখ ভেঙিয়ে ভেঙিয়ে বলছেন রমলা।

"তোর মেজোমামা নিয়ে এসেছিল না ওর সহকর্মীর মেয়ের ছবি, এমন নাক উঁচু যে সাথে সাথে না করে দিল! মেয়ে নাকি বড্ড লম্বা! যে মানুষটা এতো খুঁত দেখে বেড়াচ্ছেন সে কিভাবে এমন একটা মেয়েকে নাত-বউ করে আনবে বলতে পারিস! আমিই বা কিভাবে বলবো বল দেখি!" - ঘরে ঢুকে হাউমাউ করে বলে যাচ্ছেন রমলা! আর প্রমিত তখন হেয়ার জেল দিয়ে চুলটাকে সেট করছে।

আজ দিনটা খুব ইম্পর্ট্যান্ট ওর জন্য। আজ প্রথম দেখা হবে মেঘের সাথে। ওই ফোনে বলেছিলো ডেনিম জিন্স আর ব্ল্যাক টি-শার্ট পরতে!

"কথা কানে যাচ্ছে তোর? নাকি পাত্তাই দিচ্ছিস না!" - রমলা রেগে গেছেন বুঝতে পেরে প্রমিত আয়না থেকে সরাসরি তাকালো মায়ের দিকে! ছোট্টোখাট্টো রমলার ফর্সা মুখটা ঘেমে জল হয়ে আছে।

প্রচন্ড দুশ্চিন্তায় আছে বুঝতে পারছে প্রমিত। হবে নাই বা কেন বিন্দুবাসিনী দেবী বেজায় চাপ দিয়েছেন ছেলের বিয়ে নিয়ে আবার অন্যদিকে প্রমিত।

প্রমিত বলেই দিয়েছে বিয়ে করলে প্রিয়াকে নয়তো বিয়েটা ও আর করছে না! আর সেটা বিন্দুবাসিনী দেবীকে বোঝানোর দায়িত্ব প্রমিত রমলাকেই দিয়েছে।

রমলা রায় বাড়ির বড় বউ। এর পরে অবশ্য তিনু, জয়া, রমা আর সুমি আছেন! রমলারা পাঁচ জা আর এঁদের সব ছেলেমেয়েদের মধ্যে বড় এই প্রমিত। একটা আইটি সেক্টরে বেশ ভালো মাইনের চাকরি করে!

"মা আমি তোমায় বলে দিয়েছি ঠাকুমার বড় নাত-বউ যদি আসে সেটা প্রিয়া! ঠাকুমার মানতে হলে ভালো নাহলে..." - প্রমিতের ছেড়ে দেওয়া কথা সাথে সাথে ধরলেন রমলা - "নাহলে? নাহলে কি করবি! পালাবি?"

প্রমিত আবার দুই হাত দিয়ে নিজের চুলগুলোকে নিয়ে খেলতে খেলতে বলল, "প্রিয়ার সাথে চুটিয়ে প্রেম করব কিন্তু বিয়ে করব না! ঠাকুমার আর নাত-বউ দেখার সুযোগ হবে না!"

প্রমিত বলল, "তুমি এটুকু করে দিতেই পারতে মা আমার জন্য! শুধু এটুকুই তো বলেছিলাম যে ঠাকুমাকে সবটা বলো! আগে থেকেই কেন ভাবছ উনি রাজি হবেন না!"

"তুই কতটা চিনিস তোর ঠাকুমাকে? চব্বিশ বছর ঘর করছি! এতো বয়স হলো ওঁনার দাপটের জ্বালায় অস্থির হচ্ছি আজও! নাহলে মেজদার আনা অমন সুন্দর মেয়েকে বাতিল করে দেন! কি সুন্দর টানা টানা চোখ!"

প্রমিত জিন্সের ওপর বেল্টটা ঠিক করে আটকাতে গিয়ে হেসে ফেললো রমলার কথায়। প্রিয়ার কথা তো কবেই মা'কে বলেছে প্রমিত। পারিবারিক বন্ধু বললেই চলে। প্রিয়ার বাবা আর প্রমিতের মেজো কাকা দুজন খুব ভালো বন্ধু। সেই সূত্রেই আলাপ প্রিয়া আর প্রমিতের! আর সেই ছোট থেকেই বেশ লাগে মেয়েটাকে প্রমিতের। তারপর আস্তে আস্তে ভালোলাগা ভালোবাসা সব মিশে একাকার প্রমিতের বুকে। কিন্তু পরিবার যুক্ত থাকায় বলে উঠতে পারেনি ও।

কিন্তু এবার যখন আবার সুযোগ এসেছে এটা হাতছাড়া করবে না প্রমিত। কিছুতেই না! যখনই ঠাকুমা মায়ের মেজদার আনা মেয়েকে বাতিল করল সাথে সাথে সুযোগটা খপ করে ধরল প্রমিত! মা'কে গিয়ে সবটা বলে দিল! এমনিতেই রমলার প্রিয়ার প্রতি খুব টান ছিল আগে থেকেই তারপর এখন তো আরও ব্যথা পেয়েছে ওর জন্য! কিন্তু ছেলের বউ হিসেবে খুব মেনে নিতে না পারলেও ঠাকুমার মতো বিরোধ করবে বলে এখন প্রায় ৩০% অবধি মানাতে পেরেছে প্রমিত!

"দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি হাসছিস! যাচ্ছিস কোথায় ছুটির দিনে!" - রমলা রেগে বলতেই প্রমিত সুযোগটা না ছেড়ে বলল, "মেঘের সাথে দেখা করতে!" তারপর আরেকটু থেমে বলল, "মেঘের সাথে বন্ধু পাতাতে যাবো দেখি যদি রোদ ওঠে!"

অবাক হয়ে দেখছেন রমলা ছেলেকে! কি করছে ও! ছি! ছি! বিন্দুবাসিনী দেবী তো কোন ছাড় উনিও কি মেনে নিতে পারবেন এই বিয়ে! ছি! ছি! ছি!... এতো ভালো ছেলে ওনার! কত ভালো বউ পেতে পারতেন! প্রিয়াকে খারাপ লাগত না রমলার। অমন সুন্দর মেয়ে কত ভালো আবৃত্তি করত! অপূর্ব গানের গলা! এমন ছেলের বউ তো সব মা চায়!

কিন্তু এখন! "কি ভাবছো?" - প্রমিত বলতেই রমলা হাউহাউ করে বললেন, "সোজা ঠাকুমার ঘরে গিয়ে সবটা বলে তবে বাড়ি থেকে বেরোবে! কাল আবার কোন এক মেয়ের বাড়ি থেকে আসবে! আমি আর এসব নিতে পারবো না! না তুই মেয়ের বাড়ির সামনে যাবি না তোর বাবা ঠাকুমা তোকে ছাড়বে! মাঝখান থেকে রোজ রোজ পিষে যাচ্ছি আমি!"

মায়ের মুখটা দেখে খুব খারাপ লাগল প্রমিতের। ছোট থেকেই এই মুখটায় বড্ড ভয় আর কান্না দেখেছে ও! ঠাকুমার জন্য, বাবার জন্য! ওর জন্যও ওই চোখে জল ও কিছুতেই দেখতে পারবে না! যাই হোক এটা প্রমিতের সিদ্ধান্ত এটার জন্য মায়ের ওপর কোনো অত্যাচার ও মেনে নিতে পারবে না!

"আচ্ছা যাচ্ছি!" - বলেই হনহন করে এগিয়ে গেল প্রমিত। দোতালায় একদম কোণের ঘর প্রমিতের আর ওর ঠিক নীচেই বিন্দুবাসিনী দেবীর। আগে একতলার ওই ঘর থেকে আসতোই না প্রমিত! খাওয়া ঘুম পড়াশোনা সব ঠাকুমা, আর এখন যায়ই না ওই ঘরে!

ওর সেই মিষ্টি ঠাকুমাকেই আজকাল ওর ভিলেন লাগে! ঠাকুমাকে ঠাম্মি ডাকা যাবে না! বাইরে থাকা যাবে না! চাকরিসূত্রে বাইরে যাওয়া যাবে না! নাহলে প্রিয়া বিয়ের পরেপরেই পালাতে চেয়েছিল, প্রমিত সেটা হতে দেয়নি যখন আজকের দিনটা দেখতেই হবে ওঁকে। একরকম জেদ নিয়েই ঠাকুমার ঘরে ঢুকল প্রমিত।

"বাব্বা কোন দিকে সূর্য উঠল আজ!" ব্যাগের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে বললেন বিন্দুবাসিনী দেবী! ব্যাগের ভিতরে হাত ঢোকানো মানে মুখে কৃষ্ণনাম চলছে নিঃসন্দেহে!

"ঠাকুমা তোমাকে একটা কথা বলতে এসেছি!" - কোনো রকম আমতা আমতা নয় যা বলবে সরাসরি ঠিক করেই এসেছে প্রমিত। আজেবাজে কথা বললে প্রসঙ্গ থেকে সরে যাবে ও!

"সে বুঝেছি! তুই এমনি আসিসনি! আগে আমার কথা শোন কাল রবিবার মেয়ে বাড়ির লোক আসবে! বাড়িতে থাকবি! মনে হচ্ছে এটাই ঠিক হবে!" - বিন্দুবাসিনী একাধারে নাতির সাথে কথা বলছেন কিন্তু অন্যদিকে কিন্তু জপটা করেই যাচ্ছেন। ক্ষমতা আছে মহিলার! সুযোগ পেলে দেশ চালাতে পারতো! মনে মনে ভাবল প্রমিত।

"ঠাকুমা সেই ব্যাপারেই বলতে এসেছি! আমি বিয়েটা করব না! মানে বিয়েই করব না!" - প্রমিত বলতেই বিন্দুবাসিনী দেবী হেসে বললেন "সন্ন্যাসী হবি?" প্রমিত বললো "না! বিয়ে করতাম যদি প্রিয়ার সাথে দিতে!"

কথাটা বলেই খেয়াল করল প্রমিত বিন্দুবাসিনী দেবী কাপড়ের ব্যাগ থেকে হাত বের করে নিলেন!

সময় যদি সেরকম হয় সেটা হাতে আনতে মানুষ ভগবানকে ডাকতেও ভুলে যায় বোধহয়!

"প্রিয়া? মানে ওই বিধবাটা?" - খুব বাজেভাবে বললেন বিন্দুবাসিনী দেবী! "ঠাকুমা! একদম ওভাবে বলবে না ওকে! বিধবা ওর পরিচয় নয়! ওর পরিচয় ও বড় একজন গায়িকা ওর পরিচয় ও মেঘের মা! ওর পরিচয় ও আমার প্রথম প্রেম!"

বিন্দুবাসিনী দেবী নাতিকে দেখছেন। কি বলছে এসব! উত্তর কলকাতার বিখ্যাত বাড়ি এই রায়বাড়ি। দুশো বছরের পুরোনো দূর্গাপুজো, গোপাল! তাঁদের দায়িত্ব নেবে অমন একজন! না না এ হতে পারে না! ভাবনাটা মুখে না এনে অন্যভাবে বললেন - "মেয়েটা এখনও ঘাড় থেকে নামেনি তোর! বিয়ে করে বাচ্চা নিয়ে আবার!"

"হুম ঠাকুমা আবার! আর আমিও ওঁদের দুজনের দায়িত্ব নেবো তুমি মানলে এই বাড়িতে বিয়ে করে এনে না মানলে বিয়ে না করে! দূর থেকে!"

প্রমিতের কথায় আরও দ্রুত জপ করছেন বিন্দুবাসিনী দেবী! হয়তো জোরে করলে কৃষ্ণ ঠাকুরের কাছাকাছি আরও তাড়াতাড়ি পৌঁছনো যাবে!

"এ বাড়িতে থাকলে আমার পছন্দের মেয়েকেই বিয়ে করতে হবে!" - বিন্দুবাসিনী দেবী বলতেই প্রমিত বললো "তাই তো করবো না!" বিন্দুবাসিনী দেবী চৌখোশ উকিলের মতো চোখ মুখ করে বললেন "তার মানে এই বাড়ি থেকে বেরোবি না! আর বেরিয়েই বা কি করবি! এতো সুখ, নাম যশ কোথায় পাবি? সেয়ানা তো! নিজেরটা গোছাতে হবে না! শোন ঐসব ভূত বের কর মাথা থেকে, সমাজসেবা করতে চাইলে মেয়েটাকে কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করতে পারিস!...

বিশ, পঁচিশ, পঞ্চাশ লাগলে আমি দিয়ে দেবো। বড়োলোক বাড়ির ছেলেদের এরকম নাম কেনার একটু আধটু শখ থাকে!" - বিন্দুবাসিনী দেবী কথাগুলো বলার সময় খেয়াল করলেন চোখদুটো বন্ধ করে রেখেছে প্রমিত। ওঁর বড় নাতি। যাঁর জন্মের পর কত গরীব দুঃখীদের খাইয়েছিলেন উনি! কত যত্নে বড় করেছেন! বড়ো হয়েছে প্রায় ছ'ফুট কিন্তু মানুষ করতে পারলেন কি!

"ঠাকুমা আমি আসছি!" - বলেই প্রণাম করলো প্রমিত। "কোথায় চললি?" - বিন্দুবাসিনী দেবী জিজ্ঞেস করলে বলল, "আর দুটো দিন এই বাড়িতে থেকে তারপর বেরিয়ে যাবো কিন্তু তোমার সাথে আজ শেষ দেখা!"

বিন্দুবাসিনী দেবী দেখলেন থরথর করে কাঁপছে ছেলেটা! একদম দাদুর মতো! এমনই রাগী আর অভিমানী ছিলেন রায় মশাই! সে তো নাতিটাকে চিনলোই না! আর চিনবে কি! ছেলেগুলোকেই ঠিকঠাক চেনে না! ছোটোটার দুই বছর - পালালো! কি ছাই জ্বর কে জানে!

বিন্দুবাসিনী দেবী দেখলেন প্রমিত এগিয়ে গেছে দরজার কাছ অবধি! কানে ফোন "হুম মেঘ আমি আসছি! তুমি মাম্মার সাথে এসো! আমি আসছি!"

আর কি কি বলছে সেটা শোনার সময় নেই বিন্দুবাসিনী দেবীর। খাট থেকে নেমে গিয়ে ফোনটা প্রায় ছিনিয়ে নিলেন নাতির হাত থেকে। "ঠাকুমা ফোনটা দাও! তুমি আমায় যা বলছো বলো! প্রিয়াকে কিছু বলবে না!" - বলেই যাচ্ছে প্রমিত!

"হ্যালো!" বিন্দুবাসিনী দেবী বলতেই ওপাশ থেকে শিশুকণ্ঠ - "হ্যালো!"

"মা-কে দাও তোমার!" - বিন্দুবাসিনী দেবীর কথায় ওপাশ থেকে প্রিয়া হ্যালো বলতেই প্রমিত ফোনটা টেনে নিতে যাবে বিন্দুবাসিনী দেবী বললেন, "ছেলেটাকে তো দিব্বি হাত করেছিস! মেয়েটাকে নিয়ে সংসার কর! কি দরকার এসবের! অনেকেই তো অল্প বয়সে বিধবা হয়! কেন প্রমিতের দাদু মারা গেছে তখন ওর ছোট কাকার বয়স দু'বছর। বাকিরা দু'বছর করে বড়! বুঝতে পারছিস মেয়ে তাহলে বড়োজন মানে প্রমিতের বাবা দশ! আর আমার বয়স ত্রিশ! বুঝতে পারছিস তুই! এই পাঁচটা ছেলেকে নিয়ে শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে সংসার করেছি! দিনের শেষে মনে হতো একটা কেউ যদি থাকতো! কেউ যদি রাতে এসে পাশে বসে বলতো বিন্দু আমি আছি!"

প্রমিত ঘুরে ঠাকুমাকে দেখছে! চোখ ছলছল করছে ওঁর! সেটার থেকেও বড় কথা কি বলতে চাইছে ঠাকুমা!

"তুই তো খুব ভাগ্যবতী যে অমন ছেলে পেলি আমার নাতির মতো! আমি খুব করে যাচাই করেছি হারামজাদাকে! কে জানে বড়োলোকের ছেলে বলে সমাজসেবা করতে তোর আর তোর মেয়ের দায়িত্ব নিচ্ছে কিনা! না বেটার বুকের পাটা আছে, ভালোবাসা মজবুত আছে!"

ফোনটা লাউড স্পিকারে চলে গেছে বিন্দুবাসিনী দেবীর কানের চাপে! পরিষ্কার শোনা যাচ্ছে প্রিয়ার নাক টানার শব্দ! দু’বছর হলো একটা এক্সিডেন্টে মারা গেছে ওর বর, মেয়েটা তখন দেড় বছর! বৈধব্য যে কতটা অসহায়তার কতটা কষ্টের তা বিন্দুবাসিনী দেবী বোঝেন।

"ওই মেয়ে! মেলা ফ্যাঁচ ফ্যাঁচ করিস না!" এটুকু বলে নিজেও নাক টানলেন উনি। তারপর বললেন "কি করবি আসবি আমার বাড়ি? হবি আমার নাত-বউ! শোন অনেক দায়িত্ব কিন্তু! সকালে গোপাল-সেবা আছে! আমি কারোর ওপর এতদিন সে দায়িত্ব দিই নি! তুই এলে শুধু তোকেই দেবো! আর হ্যাঁ সকালে গোপুকে আমার গান শুনিয়ে ওঠাতে হবে কিন্তু! ওই যে ওই গানটা - 'শুক বলে ওঠো সারি, ঘুমায়োনা আর!/ এ জীবন গেলে ফিরে আসে না আবার'।"

গানটা গাইছেন বিন্দুবাসিনী দেবী, গলায় কান্না স্পষ্ট। কাঁদছে প্রিয়াও আর প্রমিত! ওর কান্নাটা অন্যরকম, পিছন থেকে ঠাকুমাকে জড়িয়ে কাঁদছে! নাক টেনে গন্ধ নিলো ছোটোবেলার ঠাকুমার। এতগুলো বছর পর আবার আজ পাচ্ছে।

"ও ঠাকুমা ছোটোবেলার মতো একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে!" - বললো প্রমিত। কেঁদে ফেলল। ফোনের এপাশে ওপাশে সবাই কাঁদছে।

"মাম্মাম, বাবি তোমরা কাঁদছো কেন গো?" - আধো গলায় বলল মেঘ! প্রিয়ার সাড়ে তিন বছরের মেয়ে।

"হুম কাঁদছি! এসো আমার কাছে তুমি আমার কত আদরের ধন, আমার নাতির ঘরের পুতি! আমার কাছে থাকবে তুমি, পাশে শোবে! আসবে তো আমার বাড়ি!" - বললেন বিন্দুবাসিনী দেবী! সবাই কাঁদলেও এক অসম্ভব শান্তি চারিদিকে!

"আচ্ছা আর কাঁদতে হবে না! আমি আসছি! তোমার পাশে শুয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেবো! শান্তি তো?" - আধো আধো বুলিতে বললো মেঘ। হেসে ফেলল সবাই। কি সুন্দর রোদ উঠল ঘরময়।

দিনের শেষে একটা সুন্দর সমাপ্তি করতে পেরে মনে বড়ো শান্তি পেলাম আমি! আর আপনি?

চিত্রঋণঃ অন্তর্জাল থেকে প্রাপ্ত।