স্থানীয় খবর

  • বসন্ত উৎসবে মানবিক ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন

সংবাদদাতা - রূপায়ণ চৌধুরীঃ সম্প্রতি ১৪ মার্চ দোল পূর্ণিমার সূচনায় মনসাতলা বারোয়ারী প্রাঙ্গণে 'শান্তিপুর পূর্ণিমা মিলনী' এক অভিনব উদ্যোগের আয়োজন করে। সকলের জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা। সকালে এক স্বাস্থ্য ও চোখ পরীক্ষা শিবিরে শতাধিক মানুষ এই পরিষেবা গ্রহন করেন।

সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রতিবারের ন্যায় সংগঠন পাঁচজন বিদূষী অসাধারণ নারীর হাতে তুলে দেন "অনন্য নারী সম্মান"। সম্মানিত হলেন SDPO Ms. Savita Gotyal, IPS, Ranaghat Police Line, মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক অনুশ্রী গোস্বামী, যোগা জাতীয় চ্যম্পিয়ন পারমিতা সাহা, টোটো চালিকা কাজল পাল ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কন্যা পূজা চৌধুরী। প্রত্যেকেই তাদের অসাধারণ হয়ে ওঠার কাহিনী বর্ণনা করেন। আগামী প্রজন্মের কাছে এ এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

এরপর পলাশে আবিরে সংগীতে নৃত্যে মুখরিত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠান অঙ্গন। অংশগ্রহণে গৌরীকুঞ্জ, অমিয় ডান্স, ফুলিয়া অনুভব, সৃজনী নৃত্যশিল্পীবৃন্দ, সংগীতে আবহ ফুলিয়া ও আবৃত্তি মিঠু সেন। সংযোজনা - দীপমালা ব্যানার্জী ও রূপায়ণ চৌধুরী। সহযোগিতায় - পংকজ সান্যাল, পার্থ প্রামাণিক, সাধন ঘোষ, দেবু মিত্র, বাপন বর্মন, রত্না প্রামাণিক, চন্দনা মুখার্জী। সুস্থ সুন্দর পরিবেশে আশাতীত জন সমাগম হয়।


  • 'পঞ্চবটী'র বসন্ত উৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ গত ১৪ মার্চ বসন্তোৎসব পরবর্তী 'পঞ্চবটী' আয়োজিত 'বসন্ত আবাহন'-এ একটি সুস্থ সংস্কৃতি উপহার পেলাম আমরা পাঁচটি আবাসনের আবাসিকরা। প্রথম অনুষ্ঠান আমাদের একটি আবাসনের আবাসিকবৃন্দ দ্বারা পরিবেশিত হয় বসন্তকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যে সকল গীত রচনা করেছিলেন তারই কয়েকটি এবং এর শোভা বর্দ্ধন করে বসন্ত সম্পর্কিত আলেখ্য ও গানের সাথে স্বতঃস্ফুর্ত নৃত্যভঙ্গিমা। এই অনুষ্ঠানটি সুস্থ রুচির বাহক হিসাবে সকলের নিকট বহুল প্রশংসিত হয়।

পরের অনুষ্ঠান "পায়েল ডান্স একাডেমী" পরিবেশিত রবীন্দ্র গানে কিশোরী এবং ছোট্ট সোনাদের দৃষ্টিনন্দন নাচ আমাদের প্রত্যেকের হৃদয় জয় করে নেয়। তৎসহ স্বরচিত কবিতাটিও পাঠের মাধ্যমে আমরা আলোকিত হই এবং আশা রাখি পরবর্তীকালে উনি ওনার লেখা এবং পাঠের মাধ্যমে আমাদের হৃদয়াসন দখল করবেন।

সর্বোপরি উচ্ছ্বসিত প্রশংসা প্রাপ্য সৌমেন রায়ের যিনি ওনার দরাজ কন্ঠস্বরে রবীন্দ্রসঙ্গীত এবং শতবর্ষে সলিল চৌধুরীকে মননে, শ্রদ্ধায় এবং স্মরণে নিবেদিত সঙ্গীতের মাধ্যমে সকলের হৃদয়ে অধিষ্ঠান করলেন। তবে প্রকৃতি সঙ্গ না দেওয়াতে ওনার মণিমুক্তো সম আরো কিছু সঙ্গীতের পরশ থেকে আমরা বঞ্চিত হই। আশাকরি পরবর্তীতে উনি আমাদের ওনার দরাজ গলার গান শুনিয়ে অতি অবশ্যই মুগ্ধ করবেন। ওনার গানের সাথেও পায়েল ডান্স একাডেমীর পারফরম্যান্স আমাদের অতিশয় মনোরঞ্জনে সমর্থ হয়।

সর্বশেষে আয়োজক যারা ছিলেন তাদের প্রত্যেককে জানানো হয় ধন্যবাদ এবং বিনম্র অনুরোধ থাকে এই ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কেবলমাত্র দর্শকের নয়, পরবর্তী প্রজন্মকেও সুস্থ রুচির ধারক এবং বাহক হিসাবে গড়ে তুলুন যাতে গোটা ভারতবর্ষ শুধু নয় বিশ্বের দরবারেও আমরা এই আলোকবর্তিকা পৌঁছে দিতে সমর্থ হই।

যারা নিঃস্বার্থভাবে এই অনুষ্ঠানের জন্য শ্রমদান করেছেন বিশেষ করে সবার প্রিয় রূপায়ণ চৌধুরী; তাদের প্রচেষ্টা ছাড়া এতো সুন্দর অনুষ্ঠান উপস্থাপন করা সম্ভব হোতো না। তাই তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানানো হয়। এই অনুষ্ঠান হয়ে উঠেছিল আমাদের সকলের পারস্পরিক মেলবন্ধনের এক মিলনক্ষেত্র।


  • সাহিত্য সম্মেলন

সংবাদদাতা - সর্বাণী ঘড়াইঃ বইমেলায় এগরা-১ দিবসে সৃজনশীল সাহিত্য সম্মেলন আবেশভূমিঃ দ্বাদশ বর্ষ এগরা মহকুমা বইমেলার চতুর্থ দিনটি এগরা-১ ও ঋষি বঙ্কিম দিবস এবং সৃজনশীল সাহিত্য সম্মেলনের জন্য নির্ধারিত হয় বুধবার। "এগরা প্রেসক্লাব" এর সৌজন্যে অবিভক্ত জেলার আমন্ত্রিত ৭০জন কবি ও সাহিত্যিক তাদের নিত্য নতুন সাহিত্য সম্ভার কবিতা, গান, ছড়া, অনুগল্প, পরিবেশন করেন। সভাপতিত্ব করেন সংস্থার কার্যকরী সভাপতি বীরকুমার শী, উদ্বোধনী সংগীত পরিবেশন করেন কবি ও সুরকার হেমন্ত মাইতি। স্বাগত জানান মেলা উপ-সমিতির আহ্বায়ক অধ্যাপক ডঃ শান্তনু দলাই। যুগ্ম সহ-সম্পাদক সত্যব্রত সাহু ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সম্পাদক গৌরীশংকর মহাপাত্র জানান, আমন্ত্রিত কবিদের নিয়ে এই সম্মেলন হলেও অংশগ্রহণকারি সকলকে পরবর্তীকালে স্মারক দেওয়া হবে। কবিতা পাঠে অংশ নেন শঙ্খশুভ্র পাত্র, বিকাশ চন্দ, বিকাশ পন্ডিত, সুমিতা গিরি সাউ, এস মহিউদ্দিন, দিলীপ কুমার জানা, দেবাশীষ মিশ্র, ঋতিকা দাঁ, দেবাশীষ গিরি গোস্বামী, যজ্ঞেশ্বর জানা, মিঠু সিং, মহুয়া মাইতি, অলকেশ মাইতি, মানস মাইতি, নিমাই দাস, শুক্লা মাঝি প্রমুখ। সমগ্র অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় কবি কিশোর নাগ। দ্বিতীয় পর্বে এগরা প্রেসক্লাবের মাসিক পত্রিকা "সমন্বয়" প্রকাশ করেন কবি সাংবাদিক ত্রিদিব রায় ও কবি সর্বাণী ঘোড়াই। সহযোগিতা করেন সম্পাদক গৌরীশংকর মহাপাত্র ও পত্রিকা সম্পাদক কিশোর নাগ । শেষে সাহিত্যিকদের স্মারক দিয়ে সম্মান জানান হয়।

এগরা-১ ও ঋষি বঙ্কিমচন্দ্র দিবসে বঙ্কিমচন্দ্রের সাহিত্য ও বঙ্কিম চন্দ্র ও এগরা নিয়ে স্মারক বক্তব্য রাখেন পানিপারুল হাই স্কুলের প্রাক্তন সহকারী প্রধান শিক্ষক সাহিত্যিক অর্ধেন্দু দাশ। পৌরহিত‍্য করেন মেলার কার্যকরী সভাপতি। "সাহিত্য সৃজনে তরুণ প্রজন্ম" শীর্ষক আলোচনা শেষে পৌরহিত‍্য করতে গিয়ে পালপাড়া কলেজের বাংলা ভাষার অধ্যাপক ডঃ মৃণাল কান্তি দাস সুন্দর ভাবে আধুনিক কালের সম্ভাবনাময় কবিদের কবিতার উদ্ধৃতি তুলে পুঙ্খানুপুঙ্খ মনোজ্ঞ বিশ্লেষণে শব্দচয়ন, অনুভূতি, ছন্দ নিয়ে আলোচনা ও কবিতার পোষ্টমর্টেম করেন। নাতি দীর্ঘ আলোচনায় এই পর্বে অংশ নেন এগরা কলেজের বাংলা ভাষার অধ্যাপক ডঃ শান্তনু দোলাই। সান্ধ্যকালীন অনুষ্ঠানে আইনজীবী স্নেহাশিস গিরি ও সম্প্রদায়ের সঙ্গীত। "এবাকাশ" সংস্থার অনুষ্ঠান, আরাধ‍্যা রায়ের একক সংগীত শেষে "বহ্নিশিখা"র মঞ্চসফল অনুষ্ঠান সকলকে মুগ্ধ করে। সঞ্চালনায় থাকেন অধ্যাপক স্বপন কুমার মিশ্র ও কবিতা প্রধান। মঞ্চ সহযোগিতায় শঙ্কর নারায়ণ মিশ্র। পরিশেষে উপস্থিত সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন তপন কুমার মন্ডল ও আশীষ কুমার দাস।

এইদিনের অনুষ্ঠানে এটাই প্রতিভাত হয়, সৃজনশীল সাহিত্য নতুন প্রজন্মের লেখকদের হাতে অত্যন্ত নিরাপদ ও সুরক্ষিত আছে। এখানেই এই সাহিত্য সম্মেলনের সার্থকতা নিশ্চিত হয়ে যায়।


  • দোল উৎসব

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ 'করুণাময়ী সমন্বয় সমিতি'র উদ্যোগে ১৪ই মার্চ, শুক্রবার, সকাল ৮টা থেকে মহাসমারোহে উদযাপিত হয় ২০২৫ সালের দোল উৎসব।

বসন্ত ঋতুর আগমনে প্রকৃতি রাণী নব সাজে সেজে উঠেছে, দখিনা মলয় বাতাস মানুষের মনে আনে পুলকের আনন্দধারা, ঘনঘন কোকিলের কুহুধ্বনি কর্ণকুহরে জাগায় আনন্দ, এই পরিসরে বসন্তবরণ পালিত হয় দোলের গান ও আবির খেলার মাধ্যমে।

পরিচালন সমিতির সদস্য শিবু ঘোষ সংকীর্তনের দল নিয়ে নগর পরিক্রমা করে সমিতির অনুষ্ঠান স্থলে এসে কীর্তনসহ আবির খেলায় মেতে ওঠে। আনন্দঘন মুহূর্তের মধ্য দিয়ে সময় কিভাবে কেটে যায় বোঝা দায়! করুণাময়ী আবাসনের আবাসিকদের সঙ্গে আবির খেলা ও মিষ্টি বিতরণ একই সঙ্গে চলতে থাকে।

করুণাময়ী সমন্বয় সমিতির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সর্বশ্রী সুদীপ ধর, সিদ্ধার্থ দত্ত, শিবু ঘোষ, সুজয় ধর, সুশোভন মুখার্জী, সাধন পাল, মজ্ঞুশ্রী বসু, রূপা পাল, বাসুদেব কর্মকার, সুধীন মিত্র, সমর দাস ও হৃষিকেশ জানা।

সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সাফল্যমন্ডিত হয়।


  • শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের শুভ জন্মতিথি পালন

সংবাদদাতা - সমীরণ ভৌমিকঃ বিগত ১৭ই ফাল্গুন, ১৪৩১; ইংরেজির ১লা মার্চ, ২০২৫ শনিবার, সর্বধর্ম সমন্বয়ের পথিকৃত ভগবান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের ১৯০তম শুভ জন্মতিথি উৎসব উদযাপিত হল হুগলি জেলার কামদেবপুর, সুগন্ধা মোড়, চুঁচুড়াতে। উক্ত দিনে বেলুড় মঠ ও মিশন থেকে "শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা মন্দির" দেবালয়ের অফিসের জন্য একটি অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের উন্মোচন করেন বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সহ সম্পাদক পূজনীয় শ্রীমৎ স্বামী বলভদ্রানন্দজী মহারাজ। 'শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা মন্দিরে' অনুষ্ঠানটি ভোর ৫-০০ টায় মঙ্গলারতি এবং ৫-৩০ মিঃ বৈদিক শান্তিমন্ত্র ও স্তব গান দিয়ে সূচনা হয়। সকাল ৭-০০ টায় বিশেষ পূজাপাঠ করেন শ্রদ্ধেয় বিশ্বজিৎ মুখার্জি মহাশয়। সকাল ৮-০০ টায় চণ্ডীপাঠ এবং সকাল ৯-৩০ এ শিল্পী সুজয় শীলের অমৃত কন্ঠে শুরু হয় ভক্তিগীতি, ১০-৩০ মিঃ হোম ও সকাল ১১-০০ টায় শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ কথামৃত পাঠ ও আলোচনা করেন স্বামী ত্যাগরূপানন্দজী মহারাজ। তারপর দুপুর ১২-০০ টায় ভোগারতি ও ১২-১৫ মিঃ ভক্তরা প্রেমের ঠাকুর, প্রাণের ঠাকুর ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের চরণে পুষ্পাঞ্জলী দেন। দুপুর ১২-৩০ টায় সকল ভক্তরা প্রসাদ গ্রহণ করেন।

শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা মন্দিরের 'বিবেকানন্দ' হলে দুপুর ১২-৩০ মিঃ আধ্যাত্মিক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী অভিজিৎ সেন। দুপুর ২-০০টায় অনুষ্ঠিত হয় গীতিআলেখ্য 'ভক্ত ভৈরব গিরিশচন্দ্র'। পরিবেশনায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার স্বনামধন্য 'বিবেক ভারতী সোসাইটি'। মহারাজ ও ভক্ত পরিপূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ 'বিবেকানন্দ' হলে এই গীতি আলেখ্য 'ভক্ত ভৈরব গিরিশচন্দ্র' মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে শোনে উপস্থিত ভক্তকুল। দেখা যায় সকল ভক্তের চোখে জল। বয়স নির্বিশেষে নারী-পুরুষ সকলের আশীর্বাদ 'বিবেক ভারতী সোসাইটির' শিল্পীদের উপর বর্ষিত হয়। সব ভক্তেরা বলতে থাকেন অনেকদিন পর যেন সত্যিকারের একটি গীতি আলেখ্য দেখলাম ও শুনলাম। আমাদের হৃদয় ভরে গেলো। এখানে কোন 'অভিনয়' দেখলাম না। একেবারে 'ন্যাচারাল আধ্যাত্মিক গীতি আলেখ্য'। আমাদের গীতি আলেখ্যর সাথী ডাক্তার শান্তনু সেন ভক্তদের বললেন, 'আমরা ঠাকুরের পূজো করতে এসেছি। আপনাদের ভালো লেগেছে এটাই আমাদের অনন্য পুরস্কার'। বিকাল ৪-৩০ মিঃ ভজন কীর্তন করেন শিল্পী তপন বণিক। শুভ সন্ধ্যায় ৬-০০টায় সন্ধ্যারতি ও ৬-৩০ মি ভক্তিগীতি ও বৈঠকি পুরাতনী করেন শিল্পী কাশীনাথ নন্দী মহাশয়। ভক্তিপূর্ণ প্রেমঘন একটা সুন্দর দিন উপহার দেওয়ার জন্য দিনের শেষে ভক্তকুল শ্রীরামকৃষ্ণ সারদা মন্দির কর্তৃপক্ষের ভূয়সী প্রশংসা করেন।


  • কাশীপুর উদ্যানবাটিতে ভক্তদের ঢল

সংবাদদাতা - সমীরণ ভৌমিকঃ ২৬শে ফেব্রুয়ারি, বুধবার, শিবরাত্রির দিন, সন্ধ্যেবেলায়, কলিকাতার কাশীপুর উদ্যানবাটিতে ভক্তদের ঢল নেমেছিল। প্রতিবছর সর্বধর্ম সমন্বয়বাদী প্রেমের ঠাকুর, ভগবান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবকে দেবাদিদেব মহাদেবরূপে এই দিনে পূজা করা হয়। অসাধারণ ভক্তির জোয়ারে ভেসেছিল শুভ সন্ধ্যার দেবভূমি, ঠাকুরের অন্তিমলীলা ক্ষেত্র এই কাশীপুর উদ্যানবাটি।

১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১লা জানুয়ারি ভগবান শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেব উদ্যানবাটির দোতলা থেকে নিচে নেমে এসে গৃহী ভক্তদের সঙ্গে কথা বলেন এবং নাট্যকার, পরমভক্ত, মহাসাধক গিরীশচন্দ্র ঘোষকে বলছেন গিরীশ তুমি চারিধারে বলে বেড়াও আমার অবতারত্ব সম্বন্ধে। আমার সম্বন্ধে তুমি কি জেনেছো? নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষ নতজানু হয়ে ভক্তিবিনম্র চিত্তে,গদ গদ কন্ঠে বলছেন ঠাকুরকে - "ব্যাস বাল্মিকী যার ইয়ত্তা পায়নি। ঠাকুর, আমি তোমার সম্বন্ধে কি বলবো"। তখন প্রেমের ঠাকুর, প্রাণের ঠাকুর কল্পতরু ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণদেব গিরিশচন্দ্র ঘোষের উদ্দেশ্যে এবং উপস্থিত গৃহী ভক্তদের উদ্দেশ্যে বললেন, "আশীর্বাদ করি তোমাদের সকলের মনোবাঞ্ছা পূরণ হোক"। গৃহী ভক্ত রামচন্দ্র দত্ত বলেন, "আজ ঠাকুর কল্পতরু হয়েছেন। সকলের মনোবাঞ্ছা পূরণ করেছেন।"


  • শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ সেবাশ্রম, ঘাটাল-এ বাৎসরিক উৎসব এবং ধর্মসভা

সংবাদদাতা - সমীরণ ভৌমিকঃ বিগত ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, রবিবার, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে অবস্থিত শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে অনুষ্ঠিত হল 'বাৎসরিক উৎসব এবং ধর্মসভা'।

সকাল বেলায় শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের ভক্তজনেরা, এলাকাবাসী এবং স্কুলের কচিকাঁচাদের নিয়ে একটি বিশাল বর্ণাঢ্য প্রভাতফেরী অনুষ্ঠিত হয়। প্রেমের ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেব, জগৎ জননী মা সারদাদেবী এবং স্বামী বিবেকানন্দ রূপে ছোট ছোট শিশুরা অপূর্ব ভাবে সেজেছিল। উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন পূজনীয় প্রার্থনানন্দ মহারাজজী, সম্পাদক, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, মেদিনীপুর ও সভাপতি, পশ্চিম মেদিনীপুর ঝাড়গ্রাম জেলা রামকৃষ্ণ বিবেকানন্দ ভাবপ্রচার পরিষদ। উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট বিবেকানন্দ গবেষক ও সুবক্তা মাননীয় শ্রীগোপেন্দ্রনাথ চৌধুরী, কাশীপুর উদ্যানবাটি, কলিকাতা।

উক্ত ধর্মসভায় মহারাজজী ঘাটাল শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত ও নিঃস্বার্থভাবে যে ৬(ছয়) জন ডাক্তারবাবু ও একজন কম্পাউন্ডার দুঃস্থ সকল রুগীদের চিকিৎসা করেন সেইসব ডাক্তারবাবুদের ও কম্পাউন্ডারের হাতে উপহার তুলে দেন। নিঃস্বার্থভাবে যে সমস্ত ডাক্তারবাবুরা নিরন্তর রোগীদের সেবা করেন, তারা হলেন ডাঃ অরবিন্দ ভট্টাচার্য, ডাঃ অনুতোষ পাত্র, ডাঃ পার্থসারথি বেরা, ডাঃ পীযূষ ঘোষ, ডাঃ ছবি ঘোষ, ডাঃ কল্যাণ ভদ্র ও কম্পাউন্ডার শান্তনু হাজরা। সেই ধর্মসভায় মহারাজজী ঠাকুর, মা ও স্বামীজীর সম্বন্ধে সুন্দর আধ্যাত্মিক বক্তব্য রাখেন। তারপর বক্তব্য রাখলেন বিশিষ্ট বিবেকানন্দ গবেষক শ্রীগোপেন্দ্রনাথ চৌধুরী মহাশয়।

দুপুর ১২ /৩০ মিনিটে ঘাটাল বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ে সর্বস্তরের জনগণের জন্য বসে প্রসাদ গ্রহনের ব্যবস্থা ছিল।

প্রার্থনানন্দজীর কাছ থেকে জানা যায়, কিছুদিনের মধ্যে এই সেবাশ্রম বেলুড় মঠ ও মিশন দ্বারা অধিগৃহীত হবে।